পুষ্টিতথ্য নিউজ ডেস্ক:
২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। জনপ্রতি মাংসের প্রাপ্যতা দৈনিক ১৬০ গ্রাম এবং বছরে ডিমের প্রাপ্যতা ২০৮টিতে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্য পূরণ করতে হলে একদিকে যেমন উৎপাদন ব্যয় কমাতে হবে, সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য ডিম ও মাংসের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে; অন্যদিকে তেমনি ডিম, দুধ ও মাংস কে অধিকতর নিরাপদ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা। আজ ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (WVPA), বাংলাদেশ শাখা আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ৫ম এশিয়া মিটিং-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মহাপরিচালক ডা. শাহজাদা বলেন, আমরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে চাই এবং এক্ষেত্রে পোলট্রি শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। তিনি বলেন, এ শিল্পের কাঙ্খিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বেসরকারি উদ্যোক্তা, শিক্ষক, গবেষক এবং সরকার একযোগে কাজ করছে।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)’র নির্বাহী সদস্য এবং ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) এর সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিতে পোলট্রি শিল্পের অবদান অনস্বীকার্য়। গ্রাম থেকে শহরমুখী মানুষের যে স্রোত পূর্বে দেখা যেত পোলট্র্রি শিল্পের বিকাশের কারণে তা অনেকাংশে কমেছে। শাহরিয়ার বলেন, কিভাবে উৎপাদন খরচ কমানো যায় সেটিই এখন প্রধান বিবেচ্য। রোগ-জীবানুর সংক্রমণ কমাতে পারলে উৎপাদন খরচ এমনিতেই কমে আসবে। তিনি বলেন, আমরা রপ্তানির কথা ভাবছি কিন্তু নিরাপত্তার মাপকাঠিতে ডিম ও মুরগির মাংসের মান আরও বৃদ্ধি করতে না পারলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে বেগ পেতে হবে।
গ্লোবাল WVPA প্রেসিডেন্ট নিকোলাস ইতেরাদোসি বলেন, বিশ্বব্যাপী রোগ-জীবানুর সংক্রমণ বাড়ছে। পোলট্রি শিল্পের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভেটেরিনারিয়ানগণ দায়িত্বশীল ভ‚মিকা রাখছেন। পরিযায়ী পাখির মাধ্যমে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস কিভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে নিকোলাস তা তুলে ধরেন এবং ফ্রান্সের অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশের জন্য কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেন।
ফ্রান্সের অপর এক গবেষক ক্রিস্টোফি কাজাবান বলেন, একসাথে একাধিক রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে মুরগির মৃত্যুর হার বৃদ্ধর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কখনও কখনও লো-প্যাথজনিক ভাইরাসও হাইলি প্যাথজনিক ভাইরাসের মত ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করছে।
WVPA বাংলাদেশ শাখার সভাপতি প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম এবং সাধারন সম্পাদক ডা. বিশ্বজিৎ রায় বলেন, কোভিড মহামারি একদিকে যেমন বৈশ্বিক সংক্রমণের ভয়াবহতাকে তুলে ধরেছে; একইসাথে রোগ-জীবানুর সংক্রমণ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং দ্রæততম সময়ের মধ্যে প্রতিষেধক আবিষ্কার ও তার যথাযথ প্রয়োগ যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটিও বিশ্বকে শিখিয়েছে। তাঁরা বলেন, পোলট্রি শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে এগিয়ে নিতে হবে এবং ভেটেরিনারিয়ানদের আরও দায়িত্বশীল ভ‚মিকা পালন করতে হবে।
দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে মোট ১২টি প্লেনারী বক্তৃতা এবং ৭০টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র ও পোস্টার উপস্থাপন করা হয়। বিজ্ঞানীরা পোলট্রি ও জনস্বাস্থ্য (ওয়ান হেলথ) বিবেচনায় নতুনভাবে আবির্ভূত পোলট্র্রি রোগসমূহ সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ এবং এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (AMR) প্রশমনে করণীয় বিষয়ে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন।
এ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যভিত্তিক হাউটন ট্রাস্ট-মালয়েশিয়ার অধ্যাপক মোহাম্মদ হেয়ার বিন বেজোকে পোলট্র্রি স্বাস্থ্য গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ “এভিয়ান প্যাথলজি এশিয়া লেকচার অ্যাওয়ার্ড” প্রদান করেন।
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে গাভীর জাত উন্নয়ন
বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। এ দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে গবাদি পশু আবহমান কাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। “আমার...
Read more