ডিম খাবোনা, ডিম কেনা বন্ধ। ডিম পচনশীল তাই কেনা বন্ধ করে দিলে দাম কমবে বলে যারা ষ্ট্যাটাস দিচ্ছেন, তাদের বলছি আপনি জানেন কি? গত এক বছরে মুরগির খাবারের দাম ৭-৮ বার বেড়েছে। ফিডের দাম বেডেছে সব মিলিয়ে কেজি প্রতি ৭-১০ টাকা কিন্তু ডিমের দাম বা রেডী ব্র্রলারের দাম বাড়েনি সে তুলনায়। প্রতিনিয়ত লোকসান গুনছে খামারী, ডিলার, ফিড মিলার, হ্যাচারী মালিক সবাই।
যেখানে ১৬ টাকায় সিজনের শুরুতে ভুট্টা বিক্রি হবার কথা, সেখানে এবার শুরু হয়েছে ৩০ টাকায়। বর্তমানে বিক্রি ৩৫ টাকায়। মুরগি ডিম পাড়তে পাছায় তেল না লাগাতে হলেও মুখে খাবার তো দিতে হয়।
এইতো কিছুদিন আগে একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা ভ্যানে করে ৫ টাকা করে বিক্রি করতে দেখেছেন? একবারও কি মনে হয়নি একটি ডিমের দাম যেহেতু ৮-৯ টাকা, সেখানে একটি বাচ্চার দাম কিভাবে হয় ৫ টাকা?
বিগত এক বছরে অব্যাহত গতিতে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াতে বহু ফিডমিল যেমন বন্ধ হয়েছে, সেই সাথে অসংখ্য খামারি পথের ফকির হয়েছেন। সাথে যোগ হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ডলারের উর্ধ্বগতি সব মিলিয়ে ৬০-৭০ শতাংশ খামার বন্ধ। এ সময়ে সরকার তেলের দাম না বাড়ালেও ডিম ও মুরগির দাম বাড়াটা অনিবার্য ছিলো। খাদ্যদ্রব্য সহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, সে অনুপাতে ডিমের দাম তেমন একটা বাড়িেন।
আপনারা ডিম বর্জনের যে মহান বানী শুনাচ্ছেন, সেটা অনুযায়ী যদি পাবলিক ডিম খাওয়া কমিয়ে দেন তবে কপালে আরো শনি আছে। তা হলো সামনে আমদানী করে আরো বেশি দামে ডিম আর মাংস খেতে হবে।
ব্রয়লার ও লেয়ার খামারিরা লোকসান দিতে দিতে শেডে মুরগির বাচ্চা উঠাবেতো দূরের কথা, ব্যবসাই বন্ধ করে দিয়েছে। এইতো মাস দুয়েক আগেও হ্যাচারি মালিকেরা ফ্রিতে বাচ্চা দিলেও লোকসানের ভয়ে খামারিরা শেডে উঠাতে ভয় পেতেন। ফলে, অনেক হ্যাচারি তাজা বাচ্চা মেরে ফেলতে বা মাটিতে পুঁতে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন।
আজকে যারা ডিম বর্জনের ডাক দিয়েছেন তাদের বলবো আগে তেল, চাল, ডাল, চিনি খাওয়া বন্ধ করে দেন, দেখি পারেন কিনা? কারণ, প্রত্যেকটি জিনিসের দামইতো বেড়েছে। কোন্ জিনিষের দাম বাড়েনি? মূল্য বৃদ্ধির কারনে ডিম ছাড়া আর কোন্ কোন্ দ্রব্য কেনা বন্ধ করেছেন? গাড়ীতে ওঠা, লঞ্চে চড়া, বিমানে ওঠা কোন্টা বাদ দিয়েছেন? সিগারেট, বিড়ি, ডিটারজেন্ট কোন্টা?
এখনো ডিম, দুধ, মুরগিই কেবল প্রোটিন সরবরাহ করে যাচ্ছে। আর পোলট্রি সেক্টরের যে অবস্থা! সরকার যদি প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও ভতুর্কি পলিসি না করে তবে পুষ্টিহীনতায় ভোগা শুরু করবে গোটা জাতি অচিরেই।
তাই ১৬ টাকার বেনসন ফুকতে ফুকতে ১৫ টাকায় ডিম খাবোনা ষ্ট্যাটাস না দিয়ে, আপনার আশে পাশে বা আত্মীয় স্বজন কেউ পোলট্রি ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলে ডাক দিয়ে একবার জেনে নিন অব্যাহত লোকসান দিতে দিতে ওনার খামারের কি অবস্থা? মনে করছেন খামারি মুরগীর পাছায় তেল লাগিয়ে ডিম পাড়াচ্ছেন, আর উনি লাভের টাকায় ঘি মাখন খাচ্ছেন, নাকি ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে বসে আছেন।
পরিশেষে বলবো বাংলাদেশের জিডিপির উন্নয়ন বলেন আর পুষ্টির যোগান বলেন তা কেবল পোলট্রি সেক্টরই নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারী নীতিমালা ও উদ্যোক্তা বান্ধব পরিবেশের অভাবে কুসুমটা খাচ্ছে হাতে গোনা দু চারটা বিদেশী এবং দেশীয় বড় কোম্পানী। বাকী সকলে খুবই খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে পালট্রি সেক্টরে কঠিন দুঃসময় পার করছে।
ড. এফ এইচ আনসারী পেলেন জাতীয় মৎস্য স্বর্ণপদক ২০২২
পুষ্টিতথ্য নিউজ ডেস্ক: মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণ, রপ্তানি এবং মৎস্যজাত পণ্য বহুমুখীকরণ ক্ষেত্রে অবদান রাখায় জাতীয় মৎস্য...
Read more